ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি জন্ম গ্রহণ করেন ২৬ জানুয়ারি ১৯৪৮ সালে ঠাকুরগাঁও জেলায়। তার পিতার নাম মির্জা রুহুল আমিন। যিনি পেশায় একজন আইনজীবী ছিলেন। ঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। মির্জা রুহুল আমিন স্বাধীন বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। মাতা মির্জা ফাতেমা আমিন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি জীবনে রাহাত আরা বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং বিবাহিত জীবনে তাদের দুই মেয়ে রয়েছে।
মির্জা ফখরুলের চাচা মির্জা গোলাম হাফিজ ছিলেন একজন বিএনপি নেতা, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের ৪র্থ স্পিকার। মির্জা ফখরুলের অপর চাচা উইং কমান্ডার এস আর মির্জা এপ্রিল ১৯৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার, যেটি মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত, এই সরকার কর্তৃক ডাইরেক্টোরেট অব ইয়ুথ ক্যাম্পের পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
মির্জা ফখরুল ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন এবং অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
কর্মজীবন
মির্জা ফখরুল শিক্ষা ক্যাডারে ১৯৭২ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অর্থনীতি বিভাগে ঢাকা কলেজে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন।
রাজনৈতিক জীবন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সক্রিয় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (অধুনা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) তিনি একজন সদস্য ছিলেন এবং সংগঠনটির এস. এম. হল শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়কালীন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন।
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচনে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই বছর খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রথমে তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও পরবর্তীতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান।
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মির্জা ফখরুল আওয়ামী লীগের রমেশ চন্দ্র সেনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে পরাজিত হন। একই সাথে তিনি ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ ও বগুড়া-৬ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন এবং বগুড়া-৬ আসনে নির্বাচিত হলেও তিনি শপথ গ্রহণ করেন নি।
ফলে নির্বাচন কমিশন তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করে এবং সেখানে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ৫ম জাতীয় সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব পদে নির্বাচিত হন। সেই সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিরোধী দলীয় মুখপাত্র হিসেবে গণমাধ্যমে পরিচিতি পান।
বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেন মৃত্যুবরণ করার পর ২০১১ সালের ২০শে মার্চ দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ঘোষণা করেন। এবং দলটির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনে ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ মির্জা ফখরুল মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন।
মির্জা ফখরুল বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনকালে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন ইস্যুতে কঠোর সমালোচনা করেন। এছাড়া বিএনপির একাধিক দেশব্যাপী বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচীর নেতৃত্ব দেন।
Leave a comment