চিকেন’স নেক (Chicken’s Neck) বলতে ভারতের একটি সংকীর্ণ ভৌগোলিক করিডোরকে বোঝানো হয়, যা সিলিগুড়ি করিডোর নামেও পরিচিত। এটি ভারতের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে সংযুক্ত করে। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের সময়, পূর্ব বাংলা (বর্তমান বাংলাদেশ) পাকিস্তানের অংশ হয়, যা ভারতের মূল ভূখণ্ড এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে একটি ভূ-রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে।
এই বিভক্তির ফলে ভারতের জন্য এই সংকীর্ণ করিডোরটি (সিলিগুড়ি করিডোর) মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সংযোগ রক্ষার উপায় হিসেবে রয়ে যায়। ১৯৪৭ সালের পর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত রাখার জন্য চিকেন’স নেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
সিলিগুড়ি করিডোর হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এবং এর চারপাশে ভুটান, নেপাল, এবং বাংলাদেশ রয়েছে। করিডোরের প্রস্থ মাত্র ২২ কিলোমিটার হওয়ায় এটি প্রাকৃতিকভাবে সংকীর্ণ। বাংলাদেশ, নেপাল, এবং ভুটানের সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় এটি কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল।
১৯৭৫ সালে প্রকাশ্যে অনুষ্ঠিত গণভোটের মাধ্যমে ভারতের সাথে মিলিত হওয়া অবধি রাজতন্ত্রী সিকিম করিডোরের উত্তর দিকে ছিল। এটি শিলিগুড়ি করিডোরের উত্তরে ভারতকে সুরক্ষা দিয়েছে এবং চীনা চুম্বি উপত্যকার পশ্চিম দিকের উপর ভারতের নিয়ন্ত্রণকে একীভূত করেছে।
২০০২ সালে ভারত, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ এই অঞ্চলে একটি মুক্ত বাণিজ্যাঞ্চল গঠনের প্রস্তাব গ্রহণ করে। এই প্রস্তাবে উক্ত অঞ্চলের মাধ্যমে অবাধে চার দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেন চালানোর কথা বলা হয়।
চিকেন’স নেক এখন ভারতের সামরিক, অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য অপরিহার্য। তবে এর সংকীর্ণতা এটিকে নিরাপত্তা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে উপস্থাপন করে।
চ্যালেঞ্জসমূহ:
- সংকীর্ণ প্রস্থের কারণে এটি একটি সম্ভাব্য দুর্বল পয়েন্ট, যেখানে শত্রুরা সহজেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারে।
- করিডোরটি ভূরাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল, কারণ এটি তিনটি দেশের সীমান্তের কাছাকাছি।
- এছাড়া অবৈধ ড্রাগ ও অস্ত্রচোরাচালান বর্তমানে এই অঞ্চলের প্রধান সমস্যা।
Leave a comment